"কুসুমিতা তোমাকে" __আয়শা আহমেদ
এইসব ক্লান্তি আসা জ্যৈষ্ঠের দুপুরে-
ঘোলা জলে আকাশ ভাসা নিস্পন্দ পুকুরে,
জলকাদায় শান্তি খোঁজা অন্ধ শালিকের ছাতির মতো
আমার শূন্যস্থান বাঁ বুকটাও ক্যামন ক্যামন করে!
ডানায় নীড়ের ঘ্রাণ মাখিয়ে নিয়ে,
পৃথিবীর তাবৎ দৃষ্টিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে-
বেলাশেষে, অন্ধ পাখিরাও নীড়ে ফেরে আত্মস্থ কবিতার মতো।
অথচ কুসুমিতা, তুমি নীড় ভুলে যাও, কী'করে!
.
তুমি কি জানো না-
খাঁচামুক্তি পাওয়া পাখিটাও সাঁঝের বেলায় ফিরে আসে কোন আকাশের টানে?
কোন সুতোর টানে মানুষও সর্বংসহা হয়,
বুকের বাঁ'দিক খামচে ধরে আজন্ম অনুভূত হয় প্রথম প্রেম; গত বিশ্বযুদ্ধের দামামা!
.
আমি জানি কুসুমিতা,
সদ্য কোকিলে বিবর্তিত হওয়া শিশুপাখিটিরও
কাক নীড়ের জন্য প্রাণ কাঁদে যে মায়ায়,
তার নাম ঘর, ডাকনাম-ভালোবাসা!
অথচ, নীড়,মায়া,কিংবা ঘরে ফেরা -
এইসব শব্দদের কোন অর্থবোধক অনুভূতি নেই তোমার অভিধানে,
তুমি কেবল ভুল আকাশের নেশায় ওড়ো,
ভুল তুফানের হাওয়ায় ভেসে ধ্বংস খোঁজো, মুক্তি খোঁজো!
রাখাল বাঁশরীর সুর শূন্য বুক,
সাঁঝ পাখিদের ডানার ঘ্রাণের ঘরেফেরা সুখ
আত্মকেন্দ্রিক সুখ ছাপিয়ে,
কিছুই আর আগের মতো ভাবায় না তোমাকে।
তবু জেনে রেখো কুসুমিতা -
তোমার প্রস্থানে যে নীড় খাঁচা হয়েছে,
তোমার প্রত্যাখ্যানে যে বুকের উর্বরা জমিন হয়েছে পাথর,
সেখানে আজও তোমার নাম জপ হয় বাতাসে বাতাসে।
আমি জেনে গেছি কুসুমিতা, ঝড় কখনোই ফেরে না তার ধ্বংসস্তূপের কাছে।
তবুও আমি বুকের বাঁয়ে নীড় সাজাই,
সহস্রবার তছনছ হতে, আমি বুক পেতে দেই তোমার চরণতলে,
আমি বার বার ধ্বংস হতে, পুনঃপুন স্মরণ করি-
কুসুমিতা তোমাকে!
No comments: